লে. কর্নেল আহসানুল কবির। একজন দুর্নীতিবাজ, চরিত্রহীন এবং মানবতা লংঘনকারী আওয়ামী অফিসার। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সময়কালে যে কয়জন খুনী এবং স্বেচ্ছাচারী আওয়ামী অফিসার আছে, তারমধ্যে অন্যতম আহসানুল কবির। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের ইন্টারোগেশন সেলে নিরীহ বিডিআর সৈনিকদের থেকে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করতে গিয়ে কয়েকজন সৈনিককে মেরে ফেলার মধ্য দিয়ে সে তার হাত রক্তাক্ত করে, এবং পরবর্তীতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে বদলী হয়ে হাত আরো পাকা করে। RAB-1-এ কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি ‘কসাই’ নামে পরিচিত ছিলেন। অনেক মানুষকে গুম খুন করলেও তার একটা বড় অপারেশন হলো গার্মেন্টস কর্মী নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যা। তিনি ২০১২ সালে আমিনুল ইসলামকে আশুলিয়া থেকে তুলে নিয়ে আসেন এবং হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদকে জোর করে সিএমএইচে ভর্তি করার টিমে অন্যতম ভূমিকায় ছিলেন আহসানুল। ঐ সময়ই আর এক কুখ্যাত অপরাধী ছিল ডিজিএফআইয়ের তৎকালীন ডিজি মেজর জেনারেল আকবরের সান্নিধ্যে আসেন। পরবর্তীতে জেনারেল আকবরের হাত ধরে ডিজিএফআইতে আসেন ২০১৬ সালে। এখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি ঢাকার বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা নিতেন।
পরবর্তী ডিজি ডিজিএফআই মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীনের স্ত্রীর সাথে আহসানুলের সখ্যতা গড়ে উঠে এবং তারা প্রচুর অবৈধ সম্পদের মালিক হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তিনি ঢাকা এবং ঢাকার আশ পাশের এমপি ক্যান্ডিডেডদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেন এবং এর ভাগ তিনি মেজর জেনারেল আবেদীনকেও দেন। যোগ্যতা না থাকা স্বত্তেও তিনি ৪র্থ বার স্টাফ কোর্স করেন, যা সেনা আইন পরিপন্থী। দ্বিতীয় বিবাহ করলে সেনা আইনে পদোন্নতি না হওয়ার কথা থাকলেও আহসানুলের বেলায় সে নিয়ম চলে না! এই ডাকু শত অপরাধ, অনিয়ম করলেও কোন শাস্তি হয় না, কারণ তিনি লেফটেনেন্ট জেনারেল ওয়াকারের আত্মীয় এবং সাবেক সেনাপ্রধান (শেখ হাসিনার ফুফা জেনারেল মোস্তাফিজের পাড়াত ভাই)। এই সুবাদে আহসানুল নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় হিসেবে প্রচার করতে পছন্দ করেন। তার জীবন যাপন যে কোন শিল্পপতির জীবন যাপনকেও হার মানায়।
আহসানুলের সম্পদের পাহাড়ের সামান্য কিছু খতিয়ান- উত্তরাতে ২টি বাড়ি, বসুন্ধরাতে প্লট, বনানীতে ফ্লাট, নামে বেনামে নূর আলীর সাথে ব্যবসা, মানব পাচার, এয়ারপোর্টের চোরাকারবারি ব্যবসা কি নাই তার। একজন সেনা কর্মকর্তা এত অপরাধ স্বত্ত্বে তার কোন শাস্তি হয় না, গোয়েন্দা রিপোর্ট কাজ করে না। এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে যে, সেনাবাহিনীর চোখ গত ১৪ বছর যেন অন্ধ হয়ে আছে! তবে জানা গেছে যে, এহেন কাজে লিপ্ত থাকায় আহসানের কোর্সমেটরা তার থেকে দুরত্ব বজায় রাখে। সেনাবাহিনীর মত এমন একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান এদের মতো গুটিকয়েক অমানুষের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ থেকে মুক্তি না পেলে এ বাহিনীকে টিকিয়ে রাখা সত্যিই কঠিন ব্যাপার।