বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের তৃনমূল পর্যায় থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ৩ নেতাকে নিয়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ। দাবি উঠেছে অবিলম্বে দল থেকে তাদেরকে বিহিস্কারের। অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় ৩ ভাইস চেয়ারম্যান শাহ্ ময়াজ্জেম হোসেন , মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর দলের ভেতরে থেকে সরকারের এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে এই তিন নেতা বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। তারা বলছেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আপসহীন হলে কারাগারেই থাকতেন খালেদা জিয়া। আপস করেই কারাগার থেকে মুক্তি নিয়েছেন তিনি। তারা তাদের বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে নিয়ে সমালোচনা করেন।
আলোচিত তিন সিনিয়র নেতার বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন তারা। সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছেন এই তিন নেতা।
শাহ্ মোয়াজ্জেমের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ৮২ বছরের “গুটিবাজ শকুন”। যিনি তার গোটা রাজনৈতিক জীবন কাটিছেন আপোষ করে হালুয়া রুটির আশায়। ছাত্র জীবনে শাহ মোয়াজ্জেম ছাত্রলীগের একবার সাধারণ সম্পাদক ও তিনবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ ও ৭৩ সালে ছিলেন আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য ও চিফ হুইপ। শেখ মুজিব হত্যার পর খন্দকার মোশতাক আহমেদের মন্ত্রিসভার মন্ত্রী হন। আশির দশকে এরশাদের জাতীয় পার্টির মহাসচিব, মন্ত্রী, সংসদ উপনেতা ও উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।পরে বিএনপিতে এসেছেন। শাহ্ মোয়াজ্জেমের মুলত আপোষ আর পদলেহনের নেতা । নীতি হীন নেতা।
হাফিজ উদ্দিন ছিলেন জাতীয় পার্টি -(জাপা ) থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনে সংসদ সদস্য হন। ১/১১ এ মাইনাস ফরমুলায় বিএনপির সংস্কার চেয়ে আলাদা বিএনপি করেন। বৃহত্তর বরিশালে নিজ প্রভাব বজায় রাখতে কোন্দল সৃষ্টিকারী এবং কোন্দলের অন্যতম মদদ দাতা হিসাবে সর্বজন স্বীকৃত।
শাহজাহান ওমর ওয়ান ইলেভেনে সংস্কারপন্থিদের সাথে ছিলেন। তিনি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য না হতে পারলে পদত্যাগের ঘোষনা দিয়ে রেখেছেন।
তৃনমূলের নেতা কর্মির সাথে এই ৩ নেতার কোন যোগাযোগ নেই। নিজ এলাকায় তারা খুব একটা যান না। নেতা কর্মিরা তাদের কাছে তেমন একটা আসেন না। দলীয় প্রোগ্রামেও তাদেরকে তেমন একটা পাওয়া যায় না।
দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, তারেক রহমান উত্তরাধিকার সুত্রে নয়,যোগ্যতার কারনেই বিএনপির নেতা হয়েছেন। কারো শুন্যস্থান কেউ পুরন করতে পারে না। নেতৃত্ব দিতে পারে না। তারেক রহমান ন্যাচারাল লিডার। দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা সবাই তাকে গ্রহন করেছেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি চলছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই। আমাদের কোন অসুবিধা হচ্ছে না। তিনি তৃনমুলের সাথে ভার্চুয়াল মিটিং করছেন।গ্রামের নেতাদের সাথেও ভাচুয়াল মিটিং করছেন।বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ। তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে চলছে বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র নেতা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন তারেক রহমান। তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের সঙ্গে কথা বলছেন,প্রতিটি বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন এবং সাংগঠনিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। তার নেতৃত্ব নিয়ে তৃনমুলে যে আবেগ তৈরী হয়েছে তা অভাবনীয়। দলকে তিনি ইতিমধ্যে তৃনমুল শক্তিতে পরিনত করেছেন।সর্বস্তরের নেতা-কমীদের সাথে তার যোগাযোগ এতই নিবিড় যে তিনি দূরে থাকলেও সেই অভাব অনুভব করার সুযোগ দেন না নেতা-কর্মীদেরকে। কেবল বর্তমান নয়,অতীতেও তিনি তার সুদক্ষ নেতৃত্বের প্রমান রেখেছেন। তারেক রহমান ২০০১ সালে দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি একজন গেমচেঞ্জার। বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে তিনি বিএনপির রাজনীতিকে নতুন করে সাজাচ্ছেন।দল যখন শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ তখন ঐক্য বিনস্ট করার চেস্টা চলছে। যারা এধরনের চেস্টা করবেন তারা কোনদিনই সফল হবেন না।