বিশেষ সংবাদদাতা
কথায় কথায় হাইকোর্ট দেখান সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর। একের পর এক মামলা দায়ের করছেন নিজ এলাকার সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে। স্বীয় প্রভাব-প্রতিপত্তির জানান দিতে মামলা দিচ্ছেন নানা ছুতোয়। তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ মানব বন্ধন করেছেন। গোবিন্দের নিগ্রহের শিকার অন্তত ৩ হাজার মানুষ গণস্বাক্ষর করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রপতির দরবারে আবেদনও করেছেন। প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছেও দরখাস্ত করেছেন। কিন্তু বিচারপতি অপসারণে বর্তমানে কোনো ‘সুপ্রিম কাউন্সিল‘ নেই। এ কারণে কোনো দফতরই বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি সাংবিধানিক পদে থেকেও নিজ এলাকার নিরীহ মানুষদের ওপর করে যাচ্ছেন যা ইচ্ছে তাই।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, মাদারিপুর রাজৈর উপজেলার কদম বাড়ি ইউনিয়নটি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। এখানকার ৯৩ ভাগ মানুষই সনাতন ধর্মাবলম্বী। অপেক্ষাকৃত পশ্চাদপদ এই এলাকায় বেড়ে ওঠা বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী থেকে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০১২ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে তিনি ‘স্থায়ী‘ হন। এর পর থেকেই পদ-পদবির দম্ভে ধরা কে সরা জ্ঞান করতে থাকেন তিনি। পাড়া-প্রতিবেশী, গ্রামের মানুষকে তুচ্ছ কারণে জড়াচ্ছেন মামলায়। নিরীহ,শান্তিপ্রিয় মানুষের মাঝে সৃষ্টি করছেন বিভেদ, কোন্দল,হানাহানি। বহু নিরপরাধ মানুষ গোবিন্দ চন্দ্রের রুদ্ররোষে পড়ে যাপন করছেন দুর্বিষহ জীবন। এসব ক্ষেত্রে কখনও সরাসরি ব্যবহার করছেন নিজ বিচারিক এখতিয়ারকে। কখনওবা হাইকোর্টকে ব্যবহার করে এখতিয়ার বহির্ভুতভাবে করছেন ক্ষমতার অপব্যবহার।নিজ জেলার বিচারক এবং স্থানীয় প্রশাসনের ওপর অবৈধ প্রভাব বিস্তার করছেন।তার অবৈধ কর্মকান্ডের দালিলিক প্রমাণসহ প্রেসিডেন্টের দফতরসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করলেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ছাত্রজীবন থেকেই রাজৈর আড়িয়াকান্দি গ্রামের নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে দলাদলিতে নেতৃত্ব দিতেন। ঢাকায় সুপ্রিম কোর্ট বারের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করতেন। স্থানীয় সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারগুলো তার ভয়ে থাকতো তটস্থ। নিরীহ মানুষ-জনের ওপর তার অত্যাচারের সীমা ছাড়িয়ে যায়। তবে ওয়ান-ইলেভেন সরকার আমলে তিনি কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকেন। কারণ এ সময় পুলিশ বাদী হয়ে ২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বিরুদ্ধে একটি জিডি (নং-৯৯৫) করে। তদন্ত শেষে জিডিটি (নন জি আর ৭৮/৮) ১৮৮ ধারামতে মামলায় পরিণত হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলে গোবিন্দ চন্দ্র প্রতিবেশী দেশ ‘ভারত-কোটায়’ বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভের জন্য তদবির শুরু করেন। কিন্তু বাঁধ সাধে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখিত মাদারিপুর আদালতে চলমান ওই নন-জিআর মামলা। পরে মাদারিপুর জেলা আইনজীবী সমিতির তৎকালিন সভাপতি মো:ওবাইদুর রহমান খানকে মামলাটি সমঝোতার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করে দেয়ার অনুরোধ জানান।ওই আইনজীবী তখন বাদীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪১ (ক) ধারা অনুযায়ী মামলাটি নিষ্পত্তির আদেশ নেন।ওই আদেশ দ্রুততার সঙ্গে ফ্যাক্সযোগে সুপ্রিম কোর্টে পাঠানোর পর গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে শপথ নিতে সক্ষম হন। বিচারপতি নিযুক্ত হওয়ার প্রথম ২ বছর তিনি অনেকটাই চুপচাপ ছিলেন। কিন্তু ২০১২ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে স্থায়ী হওয়ার পর রাজৈরে তিনি স্বরূপে আবির্ভুত হন। ঢাকা থেকে বিচারপতির প্রটোকল নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করেন। উপরন্তু স্থানীয় জেলা আদালতের বিচারক,থানাপুলিশ প্রশাসন,এসপি,জেলা প্রশাসক,ইউএনওসহ মাঠপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ব্যতিব্যস্ত রাখেন নিজের প্রটোকলের কাজে। তার ফুটফরমায়েশ খাটতে গিয়ে তারাও এখন বিরক্ত।
মানুষকে রেখেছেন দৌড়ের ওপর :
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের নিপীড়নে বহু সংখ্যালঘু পরিবার এখন অতিষ্ট। গোবিন্দের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে অনেকে এখন এলাকা ছাড়া।
অনুসন্ধানে জানা যায়,বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে রাজৈর কদমবাড়ি ইউনিয়নের বড়খোলা গ্রামের মৃত হারান রায়ের পুত্র সদানন্দ রায়কে পুলিশ নির্যাতন করান। আড়িয়াকান্দি গ্রামের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সুখচাঁদ মধুর ছেলে সঞ্জয় মধুকে মিথ্যা মামলা (নম্বর- জি.আর.১৬১, তারিখ-১৬/০৯/২০১৫) দিয়ে হাজত খাটান। এর আগে ২০১৪ সালের ১২ মে বড়খোলা গ্রামে হরেন্দ্র নাথ মজুমদারের পুত্র গুরুপদ মজুমদারকে রাজৈর থানা পুলিশকে দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন এবং বেধড়ক মারপিট করান।২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল আড়–য়াকান্দি গ্রামের গুরুপদ বিশ্বাসের পুত্র দিলীপ বিশ্বাসকে পুলিশ দিয়ে ডেকে ভয়ভীতি দেখান।
২০১৩ সালে নটাখোলা হাইস্কুল ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে সভাপতি হন কদমবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস।গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে প্রভাব খাটিয়ে তাকে বাদ দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি পদে বসান।এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে বিধান বিশ্বাস রিট করলে বিচারপতি গোবিন্দ প্রভাব খাটিয়ে রিটটি খারিজ করান।
উপজেলা প্রশাসনে বিচারপতির প্রভাব খাটিয়ে চাচাতো ভাই স্বপন কুমার ঠাকুরকে বেআইনিভাবে আ.ন.ব.উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগে বাধ্য করেন।একইভাবে এ স্কুলে ক্লার্ক পদে নিয়োগ দেন অভিজিৎ রায়কে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও নাক গলান এই বিচারপতি।২০১৬ সালের ৭ মে কদমবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিধান বিশ্বাসের মনোনয়নপত্র বাতিলে উপজেলা রিটার্নি অফিসারের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন।তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে ক্যাম্পেইন এবং মোবাইলে ভোট চান। ওইদিন তার করা ফোনকলের প্রমাণ রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাবু যোগেশ চন্দ্র বসুর জমির ওপর দিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থে রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। জোরপূর্বক এলজিইডিকে দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করান।
গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর নিজ চাচীর শ্রাদ্ধ্য অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের অপমান-অপদস্ত করেন। পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেন।ব্যক্তিগত শত্রুতার বশবর্তী হয়ে তিনি নিজ বাড়ি সংলগ্ন হরিপদ বিশ্বাসের পুত্র বিআরডিপি’র কর্মচারি স্বপন কুমার বিশ্বাসকে কদমবাড়ি থেকে দূরবর্তী কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুরে বদলি করান।সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক যুগল পদ বসুকে তিনি কারণদর্শানোর নোটিশ দেন।অন্যত্র বদলির হুমকি দেন।
ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সিরিজ মামলা :
রাজৈর কদম বাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে বার বার নির্বাচিত জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের সঙ্গে অনেকটা গায়ে পড়ে বিবাদে জড়ান গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর। ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে মাদারিপুর জজ কোর্টে বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি মীমাংসিত মামলা (জি.আর.নং-১৩৪/২০১০) খারিজ হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ‘কল ফর’ দেন। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর এবং মো: রেজাউল হকের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার পুরো নথি হাইকোর্টে এনে ৮ বছর আটকে রাখেন। পরবর্তীতে শুনানি কিংবা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে গত ২৭/০৮/২০১৯ তারিখে রায় দিয়ে নতুন মামলা (সিআর ৮০২/২১) দায়ের করান। মীমাংসিত একটি মামলাকে জিআর মামলায় (১৩৪/১০) রূপান্তর করেন। নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস যাতে শপথ বাক্য পাঠ করতে না পারেন সে লক্ষ্যে মামলাটি দেয়া হয়। পরে এ মামলায় আবারও জামিন নিতে হয়। এ সময় বিধান বিশ্বাসের ওকালত নামাও তিনি হাইকোর্টে জমা দেয়ার সুযোগ গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর দেন নি। হাইকোর্ট থেকে রায়ের ফাইল ২০২১ সালের নভেম্বরে মাদারিপুর বিচারিক আদালতে পাঠান ইউপি নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে। বিধান বিশ্বাস যাতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন। ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর নিকটাত্মীয়কে ‘বাদী‘ করে কদমবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একই দিন ৩টি মামলা করান। রাজৈর ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তাকেও বাধ্য করেন বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করতে। মামলাগুলো হচ্ছে যথাক্রমে : (১) রাজৈর থানা মামলা নং- ১/২০৬, জিআর ২০৬/১৬, (২) রাজৈর থানা মামলা নং-৪/২০৯, জিআর ২০৯/১৬ এবং (৩) তথ্য-প্রযুক্তি আইনে করা শাহবাগ থানার মামলা নং-৭/১৬,জিআর ৩১৮/১৬) । এসব মামলা দায়েরের জন্য ওই দিন বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর রাজৈর থানা ওসি, ইউএনওকে অন্তত: ১৬ বার টেলিফোনে চাপ প্রয়োগ করেন। এই প্রতিবেদনের হাতে সেই কললিস্টও রয়েছে।
বর্তমানে সিআর মামলা (৮০২/২১) মামলায় প্রভাব বিস্তার করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনটিও বাদীর পক্ষে নিয়ে আসেন গোবিন্দ। এতে বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আবারও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। কোনো নিরপেক্ষ কর্মকর্তা কিংবা সংস্থা দ্বারা মামলাটির পূনঃতদন্ত হলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। মীমাংসিত মামলাটির পূণঃতদন্তের বিষয়ে বিধান বিশ্বাস গত ১৬/১১/২০২১ তারিখ প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর স্বীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মামলা নিজের বেঞ্চে এনে ৮ বছর ধরে ঝুলিয়ে রেখেছেন। অথচ এ মামলার বাদী-বিবাদীগণ উভয়পক্ষ মামলা না চালানোর বিষয়ে বিচারিক আদালতে আবেদন করলেও মূল নথি হাইকোর্টে থাকার কারণে শুনানি করতে পারছেন না। বিবাদীরাও মামলা থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছেন না। মামলাটিতে বাদীর কোনো স্বার্থ না থাকলেও গোবিন্দ তার নিজ স্বার্থে মামলাটি জিইয়ে রেখেছেন।
মন্দিরের লাইট চুরি এবং ৪টি সরকারি গাঠ আত্মসাতের অভিযোগে রাধাকান্ত বরকে দিয়ে ২টি মিথ্যা মামলা (নং-০১/১৬, তাং-০১/০৯/২০১৬ এবং মামলা নং-০৪/১৬,তাং-০১০৯/২০১৬) করান। যদিও বাদী রাধাকান্ত বর নিজেই একটি চাম্বল গাছ কাটেন। এ মামলায় কদমবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস আসামি করা হয়। তিনি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জনগণ ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করলেও তারা এখন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ মামলাটিকে ব্যবহার করে গোবিন্দ স্বীয় জিঘাংসা চরিতার্থ করছেন। জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে দিয়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে বিধান বিশ্বাসকে অপসারণের।
শুধু বিধান বিশ্বাসই নন, গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর কদম বাড়ি ইউনিয়নের নটাখোলা গ্রামের সুনীতি গোলদারের ছেলেকে প্রভাব খাটিয়ে হাজতে পাঠান। দিঘির পাড় গ্রামের হরিমোহন গাইনের পুত্র মন্টু গাইনকে মিথ্যা মামলায় (নং-সি.আর.৩৩১/১৫,তাং-৩০/০৮/২০১৫) হাজতে পাঠান।
২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। কদমবাড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান নিহার বৈদ্য ভিজিডি’র চাল বিতরণ করেন। কার্ডধারী দরিদ্র মানুষ নগদ অর্থের জন্য ভিজিডি’র কিছু চাল বিক্রি করে দেন দোকানে। এ ঘটনায় রঙ চড়িয়ে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) দিয়ে দোকান থেকে ভিজিডি’র চাল ‘উদ্ধার’ দেখান। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসকে জড়ানোর চেষ্টা করেন। তাকে মামলার আসামি করতে পুলিশ প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। পুলিশ যখন অনুধাবন করলো যে, ঘটনার সঙ্গে ওই ইউপি চেয়ারম্যান কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট নন এবং এটি তদন্তেও প্রমাণ করা সম্ভব হবে না- তখন পুলিশ মামলা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ ঘটনায় মাদারিপুর জেলা পুলিশ সুপার, ইউএনও এবং ওসির বিরুদ্ধে রুল জারি করে আদালতে এনে দাঁড় করিয়ে রাখার হুমকি দেন গোবিন্দ বাবু।
এই বিচারপতির ক্রমাগত হয়রানি, অবৈধ প্রভাব, বিচারিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও দাপটে অতিষ্ট মানুষ ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাজৈর উপজেলা সদরে এক প্রতিবাদ সভা ও মানব বন্ধন করেন। ওই মানব বন্ধনে ভুক্তভোগীসহ অংশ নেন ৪/৫ হাজার মানুষ। জাতীয় দৈনিকসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর ফলে এক বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের কারণে উচ্চ আদালতের অন্য বিচারপতি এবং দেশের বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।
মানব বন্ধনে অংশ নেয়া নিপীড়িত মানুষ বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, আইনমন্ত্রী, এমনকি প্রধানমন্ত্রী বরাবর করুণ মিনতি জানান। কিন্তু এ ঘটনার জের ধরে গোবিন্দ রাজধানীর শাহবাগ থানায় কদম বাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা (নম্বর-৭/৩১৭, তারিখ-০৬/০৯/২০১৬) করান। সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট সুজিত চ্যাটার্জিকে বাদী করে করা এ মামলায় বিধান বিশ্বাস এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পিকে তিনি সরকারের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করেন।
গোবিন্দের নাম ভাঙিয়ে স্বজনদের চাঁদাবাজি :
গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের উচ্চ পদ-পদবির ভয় দেখিয়ে স্থানীয় নিরীহ হিন্দু পরিবার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। চাঁদা দিতে কেউ অস্বীকৃতি জানালে তাকে দেখানো হয় মামলায় জড়ানোর ভয়। চাঁদাবাজির অভিযোগে কদমবাড়ির জনৈক বিপ্লব রায় বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর রাজৈর থানায় একটি মামলাও করেন। ওই মামলায় গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর পরিবারের ১০ সদস্যকে আসামি করা হয়।এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, অনির্বাণ ঠাকুর, নিপূণ ঠাকুর, নির্মল ঠাকুর, প্রতীক ঠাকুর, সবুজ ঠাকুর, তন্ময় ঠাকুর,স্বপন ঠাকুর, দেব কুমার বর,প্রমথ ঠাকুর ও কুমুদ রঞ্জন ঠাকুর। এ মামলায় গ্রেফতার এড়াতে আসামিরা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। বিচারপতি এম.মোয়াজ্জাম হোসেন এবং বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের তৎকালিন ডিভিশন বেঞ্চ ওইবছর ২০ সেপ্টেম্বর তাদের জামিন দেন। গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর প্রভাব খাটিয়ে স্বজনদের জামিন নিশ্চিত করেন। শুধু তাই নয়, আসামিদের নিরাপত্তা প্রদানে গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর একটি রিটও করান। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরীর তৎকালিন ডিভিশন বেঞ্চ গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের স্বজনদের নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশনা দেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক, জেলা পুলিশ সুপার, রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজৈর থানার অফিসার ইনচার্জ এবং পুলিশের উপ-পরিদর্শক সদানন্দ বৈদ্যকে এই নির্দেশ পালন করতে বলা হয়। একই সঙ্গে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বিরুদ্ধে ‘বেআইনিভাবে’ আয়োজন করা মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ৩৭ জনের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে বিবাদীদেরকে নির্দেশ দেন। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের কর্তৃত্ব, সম্মান ও মর্যাদাকে হেয় করে আয়োজন করা বেআইনি সমাবেশ (মানববন্ধন) ঠেকাতে ১৩ বিবাদীর ব্যর্থতাকে কেন তাদের ইচ্ছাকৃত ব্যর্থতা ও পেশাগত ও বিধিবদ্ধ দায়িত্বে অবহেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে না- রুলে সেটিও জানতে চাওয়া হয়। জন প্রশাসন সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, খাদ্য সচিব, বন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাদারীপুরের ডিসি, পুলিশ সুপার, রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজৈর থানার ওসি এবং উপ-পরিদর্শক সদানন্দ বৈদ্যসহ বিবাদীদেরকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। রিটের শুনানিও করেন গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের অনুগত আইনজীবী এবিএম সিদ্দিকুর রহমান মিয়া।
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের উৎপীড়ন নিপীড়নে অতিষ্ট হয়ে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় অন্তত ৩ হাজার মানুূষ গণস্বাক্ষর করেছিলেন। স্বাক্ষরকারীদেরকেও এখন রাখা হয়ছে হামলা, মামলাসহ বহুমাত্রিক হয়রানির মধ্যে। স্থানীয়দের স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ,আইনমন্ত্রী এবং প্রধান বিচারপতি বরাবর পাঠানো হয়। কিন্তু অদ্যাবধি গোবিন্দের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। উল্টো গণস্বাক্ষরে অংশগ্রহণকারীরা এখন গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের পক্ষ থেকে যে কোনো মুহুর্তে যেকোনো ধরণের ক্ষতির শিকার হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।
জানা গেছে, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিও এখন আপিল বিভাগে বিচারাধীন। ২০১৪ সালে এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিকে অপসারণের এখতিয়ার সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থেকে জাতীয় সংসদের হাতে নিয়ে আসা হয়। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যমান সাংবিধানিক মামলাটি এখন রিভিউ পর্যায়ে রয়েছে। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা করে করা রিভিউ পিটিশনটি এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে গত ৮ বছর ধরে বিচারপতি অপসারণের এখতিয়ার সম্পন্ন কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর আত্মজিঘাংসা চরিতার্থ করার লক্ষ্যে যা ইচ্ছে তা-ই করে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি,প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়,প্রধান বিচারপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বিচারপতি নিযুক্ত হওয়ার ‘যোগ্যতা’ প্রশ্নে রয়েছে নানা অভিযোগ। ছাত্র জীবনে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতি করতেন। আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট বারে অন্তর্ভুক্ত হন ১৯৯৪ সালে। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে ভোল পাল্টে তিনি বিরাট আওয়ামীলীগার হয়ে যান। ওই বছরই তিনি আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আনুকূল্য নিয়ে ২০০৯ সালে তিনি বিচারপতি নিযুক্ত হন ভারতের আশীর্বাদে। এ ক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করেন আরেক বাম রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত তৎকালিন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। বিচারপতি নিযুক্ত হওয়ার আগে অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ছিলেন অনেকটা ‘বটতলার উকিল’। সে সময় সরকারপন্থী আইনজীবী সংগঠনে ভীড়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। এটিকে ‘সরকার ঘনিষ্টতা’র ব্যাকগ্রাউন্ড দেখিয়ে বাগিয়ে নেন বিচারপতি পদ। বিচারপতি পদ ধারণ করলেও ব্যক্তিগতভাবে তিনি অত্যন্ত সাম্প্রদায়িক। আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)র অন্যতম ডোনার গোবিন্দ। একই সঙ্গে কাজ করেন পার্শ্ববর্তী দেশের বিচার বিভাগীয় ইনফর্মার হিসেবে।
তৃতীয় বিভাগ পাওয়া যে ক’জন আইনজীবী হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ লাভ করেন গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর তাদের একজন। শিক্ষা জীবন সম্পর্কে জীবনবৃত্তান্তে খুব বেশি তথ্য তিনি উল্লেখ করেন নি। কোন্ পরীক্ষায় কি ফলাফল তিনি অর্জন করেছেন-উল্লেখ করেন নি। উল্লেখিত তথ্য অনুসারে তিনি এলএলবি তৃতীয় বিভাগ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। স্নাতক উত্তীর্ণ হয়েছেন তৃতীয় বিভাগে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে ১৯৮৪ সালে সেলিম-দেলোয়ারদের সঙ্গে তিনিও আহত হয়েছেন-এমন তথ্য উল্লেখ করতে ভোলেন নি।এতে তার পড়াশুনায় বিঘ্ন ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে তিনি পড়াশুনা করেছেন মর্মে দাবি করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলবি করেন। আইনজীবী হিসেবে তার করা বেশ কিছু মামলার রায় ‘ল’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
১৯৬৩ সালের ১৫ মে মাদারিপুর রাজৈর উপজেলার আড়িয়াকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম প্রয়াত গুরুবর ঠাকুর। মাতা-মধুমালা ঠাকুর। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিলো তথৈবচ। ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর তার বোন প্রমাদা সেনের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় পারিবারিক দৈণ্যদশার কথা নিজেই স্বীকার করেন। ছাত্রজীবনের স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, আমি তালপাতারই ছাত্র। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে কলম বানিয়ে, কয়লা দিয়ে কালি বানিয়ে, তালপাতায় লিখে আমার লেখা পড়া শুরু । পড়তাম আমার দিদির বাড়ীর পাশে প্রাইমারী স্কুলে। বাড়ী থেকে ছালায় (পাটের তৈরী) তালপাতা, কলম, কালির দোয়াত ও আদর্শলিপি বই ছালায় পেচিয়ে বগলে চেপে স্কুলে যেতাম। ঐ ছালা বিছিয়ে এর উপর বসে পাঠ নিতাম।দিদির বাড়ী সীমানায় স্কুলে গিয়ে খিধে লাগলে দিদির কাছে যেতাম অথবা দিদি ডেকে নিয়ে উড়ুম(মুড়ি) খেতে দিতেন। নিজেকে একনিষ্ঠ আওয়ামীভক্ত প্রমাণ করতে ওইদিন তিনি অনেক রাজনৈতিক কথাবার্তা বলেন। বক্তৃতা শেষ করেন ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে।
বিপুল অবৈধ সম্পদ : বিদেশে অর্থ পাচার :
নিম্নবিত্তের সন্তান গোবিন্দ যেন এখন পারিবারিক ইতিহাস ভুলে গেছেন। পদ-পদবি লাভের পাশাপাশি তিনি এখন অগাধ অর্থ-সম্পদেরও মালিক। সরকারি বাসায় থাকলেও ঢাকায় তার রয়েছে একাধিক বাড়ি, প্লট ও ফ্ল্যাট। তবে দেশের চেয়ে বিদেশেই বেশি অর্থ-সম্পদ রয়েছে তার। গোবিন্দ চন্দ্র নিজেকে সম্ভ্রান্ত ঠাকুর পরিবারে জন্ম লাভ করেছেন-মর্মে দাবি করলেও তারা প্রকৃত ব্রাহ্মণ নন। বৈরাগী বংশের উত্তরসূরী। গোবিন্দরা ৬ ভাই-বোন। বড় ভাই দুই ছেলে দুই মেয়ে রেখে পরলোক গমন করেন। গোবিন্দ প্রভাব বিস্তার করে আপন ভাতিজাকে মাদারিপুর আদালতে চাকরি দিয়েছেন। অনুগত আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ নিশ্চিত করেছেন। গোবিন্দের চার ভাইই বসবাস করেন ভারতে। বর্ধমান জেলার রসূলপুর এবং মেমারিতে গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরসহ সকল ভাইয়ের রয়েছে বাড়ি। তাদের মাধ্যমে গোবিন্দ ঘুষ ও অপরাধলব্ধ অর্থ ভারতে পাঠান। গোবিন্দের এক ছেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রে ছেলের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন। সম্প্রতি তার মেয়েও স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। দুই সন্তানের মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। সেখানেও তার বাড়ি রয়েছে। বিচারপতি থেকে অবসর নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রেই স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। গোবিন্দদের পারিবারিক অবস্থা ভালো না থাকলেও কর্মজীবনে প্রবেশের পর তিনি এলাকায় ৭/৮ বিঘা জমি কেনেন। পৈত্রিক ভিটায় গড়েছেন অট্টালিকা। মাদারিপুর রাজৈরের এই দাপুটে গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর বিচারপতির পদ থেকে অবসরে যাবেন ২০৩০ সালের ১৪ মে।