31, March, 2023
Home » বাংলাদেশের রিজার্ভ নিয়ে ভয়াবহ কেলেঙ্কারী
reserve

বাংলাদেশের রিজার্ভ নিয়ে ভয়াবহ কেলেঙ্কারী

স্যাংশনের ভয়ে আমেরিকার বদলে ভারতে জমা রেখে এক তৃতীয়াংশ গচ্চা

বাংলাদেশের রিজার্ভ আমেরিকায় না রেখে কয়েক বিলিয়ন ডলার সরানো হয়েছে ভারতে। জানা গেছে, চলতি বছর জানুয়ারী থেকে জুন মাস অবধি প্রায় দেড় হাজার কোটি ডলার ফরেন রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, তার প্রায় সবটাই ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকে ভারতীয় মুদ্রায় (INR) কনভার্ট করে জমা রাখা হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ রিজার্ভের বেশির ভাগই রাখা হতো নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে।

এর পেছনের খবর হলো, গুম এবং মানবাধিকার হরণের দায়ে গত বছর ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশ ও র‌্যাব বাহিনী প্রধান সহ ৭ সেনা কর্মকর্তা এবং বাহিনী হিসাবে র্যাবের ওপরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বাংলাদেশ সরকারের ভয় পেয়ে বসে, স্যাংশনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের রিজার্ভ ফান্ডের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। আর তাই যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে ভারতে রিজার্ভ জমা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এই ঘটনা ঘটানোর অযুহাত তৈরি করতে স্যাংশন জারীর পরপরই ২৭ ডিসেম্বর ২০২১ জনৈক মাহমুদুল হাসান নামে এক আইনজীবিকে দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং অর্থসচিব বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয় যাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরিয়ে ফরেন রিজার্ভ নিরাপদ কোনো দেশে স্থানান্তর করতে বলা হয়। ওই নোটিশে দাবী করা হয়, দেশের ‘স্বার্থ রক্ষায়’ ও দেশের জনগণকে ভবিষ্যতে ‘ভয়াবহ পরিণতি থেকে বাঁচানোর জন্য’ এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশে জমা রাখা বাংলাদেশের রিজার্ভ যেকোনো সময় আটকে দিতে পারে। তাই ফরেন রিজার্ভের অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য কোনো নিরাপদ দেশে (অর্থাৎ ভারতে) স্থানান্তর করতে হবে। এই দাবী মানা না হলে ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে রীট মামলা দায়ের করার হুমকি দেয়া হয়। এই উকিল নোটিশের পরেই সরকারে নির্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংক ভারতে জমা রাখা শুরু করে রিজার্ভ। আসলে লিগ্যাল নোটিশ সহ সব কিছু সরকারের ইশারাতেই হয়েছে।

তবে জানা গেছে, এর আরও একটি উদ্দেশ্য আছে। আর তা হলো, বাংলাদেশে যদি কখনও সরকার পরিবর্তন ঘটে বা ঘটার পরিস্থিতি তৈরী হয়, তবে ভারত যেন রিজার্ভ আটকে শেখ হাসিনার অনুকূলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

তবে এই রিজার্ভ সরিয়ে মহা বিপর্যয় ঘটে গেছে। ইতেমধ্যে ভারতীয় রূপীর অবমূল্যায়ন ঘটেছে ব্যাপক। আগে যেখানে ১ ডলারের জন্য ৬০ রূপী লাগত, এখন সেখানে ৮০ রূপী লাগছে। ফলে বাংলাদেশের জমা রাখা এক তৃতীয়াংশ রিজার্ভ হাওয়া হয়ে গেছে। অর্থাৎ আগে ১০০ ডলার জমা রাখলে এখন সেখানে ৩০ ডলার নাই হয়ে গেছে। বলা যায় এ হলো দ্বিতীয় রিজার্ভ লুট। ইতোমধ্যে আইএমএফ জানিয়েছে,হিসাবের চেয়ে অন্তত ৮ বিলিয়ন ডলার ঘটাতি রয়েছে রিজার্ভ।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্ক ফেডারেল ব্যাংকে জমা রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকার সমপরিমান ডলার চুরি করে সরিয়ে ফেলা হয় ফিলিপাইনের জুয়ার মার্কেটে, যার সাথে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা জড়িত ছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

Leave a Comment

You may also like

Critically acclaimed for the highest standards of professionalism, integrity, and ethical journalism. Ajkerkotha.com, a new-generation multimedia online news portal, disseminates round-the-clock news in Bangla from highly interactive platforms.

Contact us

Copyright 2021- Designed and Developed by Xendekweb