বিশেষ প্রতিবেদকঃ
বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি। জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচন। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির যাবতীয় তথ্য উপাত্ত্য সহকারে যুক্তরাষ্ট্রের সকল স্টেটের সিনেট ও কংগ্রেস অফিসের সামনে বিক্ষোভ ও স্মারক লিপি প্রদান । যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি স্টেটে বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ ও অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও প্রচার কমিটি গঠন সহ কেন্দ্রের যে কোন নির্দেশ দেশ রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব গন্য করে পালন করতে হবে। বাংলাদেশ এখন এক বৃহত্তর কারাগার। আসুন শপথ নেই আমরা যারা এই কারাগারের বাইরে আছি, প্রবাসে আছি তারা সুচিন্তিত ভাবে সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে কারামুক্ত করি। আর তা না হলে ঐ কারাগারে একদিন আমাদেরকেও বন্দী হতে হবে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুতবপুর্ন স্টেট নিউজার্সির আটলান্টিক সিটিতে অনুষ্ঠিত হয় “আওয়ামী দুঃশাসন-নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং প্রবাসীদের করণীয়” শীর্ষক সেমিনার। নিউজার্সী স্টেট (সাউথ) বিএনপির আয়জনে সেমিনারে নিউইয়র্ক,পেন্সেল্ভেনিয়া, টেক্সাস স্টেট বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিগন উপস্থিত ছিলেন। নিউজার্সী স্টেট (সাউথ) বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোঃ কাউছারের সভাপতিত্বে সেমিনার পরিচালনা করেন সদস্য সচিব রহমান বাবুল। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক কন্ঠ শিল্পী বেবী নাজনীন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডঃ শওকত আলী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব আশিক ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক কামাল পাশা বাবুল, টেক্সাস বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ বশীর, পেন্সেল্ভেনিয়া স্টেট বিএনপির সভাপতি শাহ্ ফরিদ, নিউজার্সি স্টেট বিএনপি নেতা, মোঃ গিয়াসউদ্দিন পাঠান, মোঃ দীদার , মোঃ আলী, মোঃ রেজা, মোসাদ্দেক মওলা, আবুল মন্সুর আখতার, অরিক প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তাগন বেবীনাজনীন ও আশিক ইসলামকে অনুরোধ করেন যেন, আজকের এই সেমিনারের একটি সারসংক্ষেপ কেন্দ্রে এবং বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে তারা পৌছে দেন।
শিক্ষাবিদ ডঃ শওকত আলী তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করে বলেন, পাকিস্থান শাসনামলে পুর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতি যতটা না ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে বর্তমান আওয়ামী সরকারের আমলে। আওয়ামী শাসন দেশের অর্থনীতি সম্পুর্ন ধ্বংস করে দিয়েছে। যার ভয়াবহ কুফল অচিরেই বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পারবে। তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায়, থানায় আওয়ামী অত্যাচারিদের তালিকা তৈরি এবং কেন্দ্র থেকে প্রবাসীদের জন্য কর্মসুচীর আহ্বান জানান।
প্রবাসীদের প্রতি কেন্দ্রের দিক নির্দেশনা নাই উল্লেখ করে বিভিন্ন বক্তা যে বক্তব্য দেন তার প্রেক্ষিতে আশিক ইসলাম বলেন, নিরাপদ অবস্থানে থেকে এই সেমিনার আয়োজন করতে আপনাদের অনেক কাঠ খড় পোড়াতে হয়েছে। যদি এর সাথে কেন্দ্রের বিশাল কর্মযজ্ঞ এবং নানা প্রতিকুলতার তুলনা করেন তাহলেই বুঝতে পারবেন কেন্দ্রের কেও বসে নেয়। জেল জুলুম মামলা হামলা গুম খুনের পরেও বিএনপি আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। বাস্তবতা হচ্ছে, আপনারা মাতৃভূমি ছেড়ে এই বিদেশের মাটিতে নিজ যোগ্যতায়, নিজ মেধায় গৌরভের সাথে স্ব স্ব অবস্থান তৈরী করে নিয়েছেন। আপনাদের মেধা ও যোগ্যতার প্রতি কেন্দ্রের পুর্ন আস্থা ও বিশ্বাস আছে। কেন্দ্র জানে ভালো মন্দ বোঝার খমতা ও যোগ্যতা আপনাদের আছে। আপনাদের অবস্থান বিবেচনায় আপনারা সঠিক পদক্ষেপ নিবেন। এবং অচিরেই আপনারা পার্টির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দিক নির্দেশনা পাবেন। তাই আসুন সকলে মিলে সিন্ধান্ত নেই কি ভাবে বাংলাদেশ নামক বর্তমানের বৃহৎ কারাগরকে শান্তির বাংলাদেশে পরিনত করতে পারি।
বেবী নাজনীন সকলকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশ আজ এক করাদ রাজ্যে পরিনত হয়েছে। কামাল পাশা বাবুল অনুরোধ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি স্টেটের সিনেট ও কংগ্রেস অফিসের সামনে বিক্ষোভ ও বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে স্মারক লিপি প্রদানের।
মোঃ বশীর তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের সকল স্টেটে বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ ও অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও প্রচার কমিটি গঠনের আহ্বান জানান এবং বলেন, আওয়ামীলীগের অনেকেই এখন বাংলাদেশের বাইরে নিরাপদ জায়গা খুজছেন, ব্যাবসা বানিজ্য বাড়ি কিনছেন। যাদেরই খোঁজ পাবেন তাদের তালিকা করুন,ছবি তুলুন। সে গুলি আমরা দুদক, বাংলাদেশ পুলিশ এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে পাঠিয়ে দিব।
শাহ্ ফরিদ তার বক্তব্যে বেশী বেশী করে প্রবাসীদের নিজ নিজ কংগ্রেস ম্যান ও সিনেটরের সাথে যোগাযোগের আনুরোধ জানান। গিয়াস উদ্দিন পাঠান, আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা প্রবাস থেকে যার যার নিজ এলাকার নিপীড়িত নির্যাতিত একটি পরিবারের পাশে দাড়ায়। মোঃ দীদার বলেন, পৃথিবীতে এমন কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নাই যাকে তার মাতৃ ভুমিতে আইন করে কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, দেশ নায়ক তারেক রহমানের ক্ষেত্রে এটি হয়েছে। এই অবিচার আমাদেরকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে।
সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন, রানা কবির, সাংবাদিক আকবর হোসেন,ফরিদ হসেন, ইসমাইল হোসেন , মিরাজ খান, মোঃ ওবায়দুল্লাহ চৌধুরী,মোঃ ইলিয়াস, মোঃ শাহজাহান ,আফিয়া নাসরিন, নূর শাহীদা, রিমা খান, হাজী ইয়াসিন, জাহিদ হোসেন, মনির হোসেন, এমডি মোহশীন, মোঃ আকাশ প্রমুখ।
পরিশেষে, সেমিনারে গৃহীত সিধান্ত সমূহ সকল প্রবাসী বাংলাদেশীর কাছে পৌছে দেবার জন্য আরো বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়। উল্লেখ্য যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটের সমন্বয়ে এমন সেমিনার এই প্রথম।