বাংলাদেশে আবার জাতীয় সরকার নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। এবার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত।
জানা গেছে, ৩০ ডিসেম্বরে নির্বাচনে ভারতের উপর নির্ভর করতে পারেনি হাসিনা। তাই চীনের দ্বারস্থ হয়ে তাদের কাছে নির্বাচনের খর্চা বাবদ ৫ হাজার কোটি টাকার ফান্ড এনেছে এবং এই টাকা দিয়েই পুলিশ ও গুরুত্বপূর্ণ লোকদের মাথা কিনে নির্বাচন পার করেছে হাসিনা। তবে বিপদ অন্যখানে- এমন ভাবে সব সিট ও ভোট কেটে নেয়া হয়েছে, যা দেশে বিদেশে কারও কাছে বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। আর তাই দেশে বিদেশে কথা উঠেছে আরেকটি নির্বাচন করতে হবে, যা হবে সুষ্ঠু।
নির্বাচনের আগে থেকেই আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকটি প্রতিনিধি দল ভারত ঘুরে এসেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির নিশ্চয়তা হাসিল করতে পারেনি। এমনকি নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার মাস খানেক আগে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের কথা থাকলেও মোদির ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় শেখ হাসিনা সফর বাতিল করেন। এর বিপরীতে সৌদি আরবে সফরের মধ্যে চীনের সাথে গুরুত্বপূর্ন আলোচনা ও সমঝোতা সেরে ফেলেন হাসিনা। বিষয়টি ভারতের জানা থাকলেও তারা ততটা বিপদ মনে করে নি তখন।
তবে বিপদের বহিঃপ্রকাশ ঘটে বাংলাদেশের নির্বাচনের দিন রাতে, অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বর। ভোট ডাকাতি ও কারচুপির প্রতিবাদে প্রায় সকল বিরোধী দলের নির্বাচন বয়কটের মুখে ফলাফল ঘোষণা হতে থাকলে দিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদি ফোন করে শেখ হাসিনাকে বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানান। এর তিন ঘন্টা পরে চীনের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট উভয়ে শেখ হাসিনার কাছে অভিনন্দন বার্তা পাঠান। এরপরে সোমবার সকালেই নৌকা, ফুল, এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের পত্র নিয়ে গণভবনে পৌছে যান চীনের রাষ্ট্রদূত! ভারত এই প্রথম লক্ষ করে- এ যে রীতিমত বাড়বাড়ি। সন্দিগ্ন হয়ে ওঠেন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্বষর্ধন শ্রিংলা।
পরবর্তী ৩/৪ দিনে সরকার গঠনের প্রকৃয়া চলতে থাকে। ভারতীয় হাইকমিশনার আ’লীগের বিভিন্ন কর্নারে যোগাযোগ করে হতাশা বাড়তে থাকে। ৬ জানুয়ারী নতুন কেবিনেট ঘোষণা করা হলে নয়াদিল্লি আকাশ থেকে জমিনে নয়, সোজা ভূতলে পড়ে! পুরোনো কেবিনেটের ৩৬ জন সদস্য আউট। ডজনখানেক সিনিয়র মন্ত্রী বাদ পড়ে, এতকাল যাদের মাধ্যমে দিল্লির স্বার্থ উদ্ধার হতো, এদের কেউ নাই। হাইকমিশনার শ্রিংলার কাছে অনেকেই ধর্ণা দেন। কিন্তু তিনি আ’লীগের হাইকমান্ডে যোগাযোগ করে প্রচন্ড ধাক্কা খান। তাকে বলা হয়েছে চুপ থাকতে। কে মন্ত্রী হবেন, কি হবেন না, তা আ’লীগের নিজস্ব বিষয়; এবং শেখ হাসিনা নিজেই দেখছেন। এ নিয়ে কোনো দেশের পরামর্শের দরকার নাই। প্রমাদ গুনেন শ্রিংলা!
ধীরে ধীরে দিল্লি বুঝতে পারে, শেখ হাসিনা বিক্রি হয়ে গেছে। চীন তাকে কিনে নিয়েছে অতি উচ্চমূল্যে। তবে ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। পরের দিন ৭ জানুয়ারী বঙ্গভবনে সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলেন হাইকমিশনার শ্রিংলা। অন্যদিকে বঙ্গভবনে সদলবলে উপস্থিত হন চীনা রাষ্ট্রদূত জ্যাং জু। শপথের পরেই তিনি দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে, এবং টেলিফোনে কথা বলিয়ে দেন চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সাথে। খবরে বলা হয়, চতুর্থবারের মতো ও টানা তৃতীয়বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী।
জানা গেছে, নির্বাচনের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম বিদেশ সফরে যাবেন ভারতে নয়, যাবেন চীন।
সবকিছু পূর্নমূল্যায়ন করতে থাকে ভারত। হাইকমিশনার শ্রিংলা বিস্তারিত লিখে জানান তার হেডকোয়ার্টার্সে। কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত সহ অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রের কূটনীতিকদের সাথে।
এরি মধ্যে নির্বাচন বর্জন করা দলগুলো অভিযোগের পাহাড় তৈরি করে তা জানাতে থাকে সর্বত্র। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে আ’লীগের ভোট জালিয়তি ও কারচুপির খবর। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য সহ সকল পশ্চিমা রাষ্ট্র বাংলাদেশের কারচুপিময় নির্বাচন নিয়ে একের পর এক আপত্তি তুলতে থাকে। বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত দাবী করে। বিব্রত হয় নতুন সরকার।
লক্ষনীয়, ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার চতুর্থবারের মত প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেয়ার পরে পরম মিত্র প্রতিবেশী ভারত থেকে কোনো অভিনন্দন বার্তা আসেনি। বরং এসেছে চীন এবং তাদের মিত্রদের থেকে। বিষয়টা একেবারেই হেলাফেলার মত নয়। বাংলাদেশ নিয়ে চীনের অগ্রসরতা দেখে ভারত বসে থাকবে না। তারা অবশ্যই তাদের নিজেদের নিরাপত্তায় যা প্রয়োজন, তাই করবে।
বাংলাদেশের স্বীকৃতিহীন কারচুপিময় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমাদের নানাবিধ তৎপরতার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন মহলে হঠাৎ কথা উঠেছে- আচিরেই জাতীয় সরকার আসছে। আর তারা থাকবে ৩/৪ বছর। দেশের সবকিছু ঠিক করে নির্বাচন দিবে তারা।